Onlinebdpolitics By Animesh Panday

ভারতের সঙ্গে ১০টি সমঝোতা স্মারকের নতুন সংস্করণ:সরকার ভারতের সঙ্গে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করেছে এটা দাসপ্রথার নতুন সংস্করণ

Author:
Animesh Panday

Share on :

সম্প্রতি ভারত সফরে গিয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী বর্তমান অবৈধ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ভারতের সাথে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করেছেন তা গোলামীর নবতর সংস্করণ মাত্র। কানেক্টিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের নামে করিডোর প্রদানের মাধ্যমে যা করা হয়েছে তাতে আমাদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।’
আমাদের নিশ্চয়ই ১৯৭২ সালে ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামী চুক্তির কথা স্মরণ আছে। ৫২ বছর পর সে ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুন ভারতের সাথে সমঝোতার আড়ালে যেসব চুক্তি করা হলো তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করবে। এর ফলে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’

‘এসব চুক্তি-স্মারকের মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার অংশে পরিণত করা হয়েছে, যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জোটনিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থী। বস্তুত, এসব সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে নিরাপত্তা কৌশলগত ‘বাফার স্টেট’ হিসেবে ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে চান। এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে পড়বে।
যে সাতটি সমঝোতা স্মারক নতুন করে সই করা হয়েছে, সেগুলোর প্রায় সবগুলোই বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকেন্দ্রিক। প্রয়োজনের সময় বাংলাদেশ ভূখণ্ডকে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহনের জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেন নেক’কে বাইপাস করে ব্যবহার করার সুদূরপ্রসারী মহাপরিকল্পনা থেকেই এসব সমঝোতা চুক্তি করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে জলাঞ্জলি দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদে ভারতের গোলামি চুক্তির গভীর ফাঁদে ফেলার সেই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। জাতীয় স্বার্থবিরোধী এহেন চুক্তি জনগণ মেনে নেবে না।”

শাসকগোষ্ঠী দাবি করে যে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ‘অনন্য উচ্চতায়’ পৌঁছেছে। কিন্তু সম্পর্কের তথাকথিত ‘সোনালি অধ্যায়’ সময়কালে বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্তি শূন্যের কোঠায়। এ সময়ে দুই দেশের মধ্যকার লেনদেনের প্রধান অংশজুড়ে রয়েছে কানেক্টিভিটির নামে একের পর এক ভারতকে ট্রানজিট ও করিডোর সুবিধা প্রদান। ট্রানজিট-করিডোর দেয়ার রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও কৌশলগত ঝুঁকি সত্ত্বেও সবকিছুই একতরফাভাবে করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থকে কোনো গুরুত্বই দেয়া হয়নি। একদিকে ভারত পেয়েছে অবাধ স্থল ও নৌ ট্রানজিট, যা ভারতের অবশিষ্ট অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টার্সের যোগাযোগের সময় ও দৈর্ঘ্য কমিয়েছে অন্তত তিন-চতুর্থাংশ। কলকাতা-আগরতলার ১৭০০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কিলোমিটারে। ভারত পেয়েছে বাংলাদেশের পায়রা, মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অগ্রাধিকার সুবিধা।”

‘অন্যদিকে বাংলাদেশ নেপালের মাত্র ২১/২২ কিলোমিটারের ট্রানজিট সুবিধা ভারতের কাছে থেকে আদায় করতে পারেনি। একতরফা আগ্রাসী বাণিজ্যে বাংলাদেশকে ভারতের অবাধ বিপণিকেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। দু’দেশের সামগ্রিক ২৬ বিলিয়ন বার্ষিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের হিস্যা মাত্র দুই বিলিয়ন। এর মাঝেও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। তীব্র বেকারত্বের বাংলাদেশে কাজ করছে লাখ লাখ ভারতীয় যুবক। ভারতের রেমিট্যান্স আহরণের প্রধান উৎসের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৪ নম্বরে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, গত ১০ মাসে ভারতীয়রা নিয়ে গেছে ৫০.৬০ মিলিয়ন ডলার। আমরা জানি, এর বাইরেও অবৈধ পন্থায় নিয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ ডলার।’বর্তমান অবৈধ সরকার যেহেতু বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে প্রতিনিধিত্ব করে না এবং তাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই, তাই দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্যও তারা সচেষ্ট নয়। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেল করিডোর দেয়ার চুক্তি, তিস্তা প্রকল্পে ভারতের সহযোগিতা গ্রহণ, প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগিতা, ওষুধ সংক্রান্ত সমঝোতা, বাংলাদেশের পানিসীমায় ভারতের অবাধ বিচরণ, ভারতের ইনস্পেস এবং বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যৌথ স্যাটেলাইট সমঝোতা, ডিজিটাল পার্টনারশিপ, গ্রিন পার্টনারশিপ, সমুদ্র সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতি ইত্যাদি নানা নাম দিয়ে যে দশটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো তাতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য। বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণের চাইতে ভারতের কাছে শেখ হাসিনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দায়বদ্ধতা থেকে এসব সমঝোতা সই হয়েছে, তা জনগণের কাছে স্পষ্ট। এসব চুক্তির সাথে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা নেই। সে কারণেই বহু পূর্বে ভারত ঘোষিত সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় ঋণ চুক্তির (লাইন অব ক্রেডিট-এলওসি) বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার বিষয়ে এ সফর ছিল নীরব।’

‘ডলারকে পাশ কাটিয়ে ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য পরিচালনার বিষয়টি উঠে এসেছে আলোচনায়, অথচ বাংলাদেশের রফতানি ও প্রবাসী আয়ের অন্যতম প্রধান মুদ্রাই হচ্ছে মার্কিন ডলার। এভাবে একতরফা আগ্রাসী বাণিজ্যে বাংলাদেশকে ভারতের বাজারে পরিণত করা হয়েছে। ট্যারিফ, নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার পরিহার করে বিপুল বাণিজ্যিক ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার কিছুই এসব সমঝোতায় স্থান পায়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা আরো বলেছেন, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় রেল ট্রানজিটের ফলে বাংলাদেশের জনগণ উপকৃত হবে। অথচ বিশেষজ্ঞরা রেল করিডোরের ফলে বাংলাদেশের লাভ নিয়ে দারুণ সংশয় প্রকাশ করেছেন। জানা যায়, এ ট্রেন বাংলাদেশের কোনো মানুষ ব্যবহার করতে পারবে না। একতরফাভাবে ভারতকে করিডোর সুবিধা দেয়ার জন্য এ চুক্তি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না। অপরদিকে এ রেল ট্রানজিটের কোনো সমীক্ষা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি। নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের কারিগরি ও অর্থনৈতিক মূল্যায়ন এবং সামরিক বিশেষজ্ঞদের ইতিবাচক বিশ্লেষণ ছাড়া এ ধরনের রেল-করিডোর প্রদান আত্মঘাতী ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী হবে মর্মে মন্তব্য করেন তারা।’

‘সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা রেল-করিডোরকে ইউরোপের সাথে তুলনা করে বলেছেন, তারা পারলে আমরা পারবো না কেন। কথা হলো- ইউরোপের ক্ষেত্রে বিষয়টি বহুদেশীয়, আমাদের ক্ষেত্রে যা কেবলই দ্বিপক্ষীয়। তাছাড়া ইউরোপের সকল দেশে সুশাসন ও ন্যায়নীতি বিরাজমান, যা আমাদের দেশে অনুপস্থিত। ইউরোপের সীমান্তগুলোতে আমাদের মতো কাঁটাতারের বেড়া নেই, ঝুলন্ত ফেলানিও নেই। অতএব আমাদের বিষয়টি ইউরোপের সাথে তুলনীয় নয়।’

Share on :

Facebook
Twitter
LinkedIn
Pinterest
Reddit
Telegram
Email
14 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
Haridas Vakto
1 year ago

আপনারা সব সময়ই কোন কারণ ছাড়াই ভারত বিরোধিতা করেন।

Nihar Bakci
1 year ago

বিএনপি হচ্ছে পাকিস্তানের দালাল ,আপনাকে ও মনে হয় পাকিস্তানের দালাল

Latif Mahmud
1 year ago

আপনার বিএনপি বলছিল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ নাকি ইন্ডিয়া হয়ে যাবে কই ভাই বাংলাদেশ তো এখনো বাংলাদেশেই আছে

Vupen
1 year ago

তোর জন্মের কোন ঠিক নাই ,তাই তুই পাকিস্তানের সাপোর্টার |ইন্ডিয়ার সাথে কোন কিছু চুক্তি করলেই আওয়ামী লীগ খারাপ আর পাকিস্তানের সাথে করলে অনেক ভালো।

Monish
1 year ago

আওয়ামী লীগ সরকারের সবকিছু নিয়ে তোর এত চুলকানি কেন? গোলামের পুত তোকে যদি পেতাম তোর সারা শরীরে চুলকানির ওষুধ ভালো করে মালিশ করে দিতাম…

Sdip
1 year ago

ভাই আপনি আম্লীগ করেন না ঠিক আছে কিন্তু আপনি ভারত বিরোধী কেন?

Gazi
1 year ago

মাগির পুত তোর সমস্যাটা কি? তুই সব সময় শুধু আমাদের নেত্রীকে নিয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলিস

Prodip
1 year ago

ভাই আপনি ভারতের এত বিরোধিতা করেন ভারত যদি সাত দিনের জন্য সব ধরনের জিনিসপত্র বাংলাদেশে রপ্তানি করা বন্ধ করে দেয় তাহলে তো দেশের লোকজন না খেয়ে মারা যাবে

Anowar
1 year ago

তুই একটা রাজাকারের বাচ্চা তাই তুই এই সরকারের যে কোনো ভালো কাজের বিরোধিতা করিস

Bashir
1 year ago

খানকির পোলা তোর যদি সাহস থাকে তাহলে একবারের জন্য দেশে এসে আমার নেত্রীকে নিয়ে এ ধরনের কথাবার্তা বল তারপর দেখ তোকে কতটুকু করি

Rajatap Biswas
1 year ago

তুই পাকিস্তানিদের জারজ সন্তান তাই তুই সব সময় পাকিস্তানের মতো ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে বলিস

Rifat Ali
1 year ago

ভারত সরকার ছিটমহল সমস্যা সমাধান করে দিল| এর আগে তোর বিএনপি সরকারে সেটা ঠিক করতে পারে নাই। তারপরও বলে ইন্ডিয়া খারাপ ইন্ডিয়া সব বাংলাদেশ থেকে সুবিধা নেয় বিনিময়ে নাকি কিছুই দেয় না।

Nobel khan
1 year ago

বিএনপি ভুয়া পাবলিসিটি পাওয়ার জন্য উপর দিয়ে ভারতের বিরোধিতা করে ,ক্ষমতায় আসার জন্য তলে তলে ভারতের পা চাটে|

Sheik Helal
1 year ago

তুই একটা বিকৃত মন মানসিকতার মানুষ| তোর লেখার ভিতর কোন সত্যতা নাই ,তোর বিএনপি’র জন্মের ঠিক নাই আর তোর জন্মের তো কোন কথাই নেই|

Related post
14
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
Scroll to Top