বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ইদানীং সব ভুল কারণেই লাইমলাইটে রয়েছেন। দেশ ও জনগণের মঙ্গলকে উপেক্ষা করে তার নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য তার অবস্থান এবং প্রভাব ব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়েছে। রহমানের কর্মকাণ্ড শুধু বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থিক খাতের ক্ষতিই করেনি, বর্তমান সরকারের সততা ও নৈতিক মূল্যবোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে প্রধান সমালোচনার একটি হল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং এর নেত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার ঘনিষ্ঠতা। আওয়ামী লীগের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে রহমান তার রাজনৈতিক যোগাযোগকে তার সুবিধার্থে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন। অন্য ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে পাশ কাটিয়ে নিজের ব্যবসায়িক উদ্যোগের জন্য অনুগ্রহ এবং চুক্তি অর্জনের জন্য তার অবস্থান ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এটি দেশে একটি অসম এবং অন্যায্য ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করেছে, যেখানে রহমানের মতো কয়েকজন ব্যক্তিই উন্নতি করতে পারে।
তাছাড়া, রহমান মানি লন্ডারিং কার্যক্রমের সাথেও জড়িত, যা শুধু তার সুনামকেই কলঙ্কিত করেনি, বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তার বিরুদ্ধে তার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অফশোর অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তর করার অভিযোগ আনা হয়েছে, এইভাবে কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে এবং দেশকে তার অতি প্রয়োজনীয় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটি কেবল রহমানের চরিত্রের প্রতি খারাপভাবে প্রতিফলিত হয় না, বরং নিজের দেশের প্রতি তার আনুগত্য নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে আরেকটি বড় সমালোচনা হল বাংলাদেশের শেয়ার বাজার এবং ব্যাংকিং খাত ধ্বংসের সাথে তার জড়িত থাকার অভিযোগ। ধারণা করা হয়, রহমানসহ আরো কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি শেয়ারবাজারে কারসাজি করে একটি কৃত্রিম ষাঁড়ের দৌড় তৈরির ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এর ফলে বাজারে ব্যাপক বিপর্যয় ঘটে, যার ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ক্ষতি হয়। একইভাবে, রহমানের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কগুলিকে তার নিজস্ব ব্যবসায় অর্থ ধার দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে ব্যাঙ্কিং খাতকে প্রভাবিত করার অভিযোগও রয়েছে, যার ফলে অ-পারফর্মিং লোন বেড়েছে এবং শেষ পর্যন্ত আর্থিক খাতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে।
এছাড়া রহমানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে অবৈধ কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে তিনি তার নিজের ব্যক্তিগত লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ব্যবহার করতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এটি একটি গুরুতর উদ্বেগ, কারণ এটি প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীনতা এবং তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দেশের উন্নয়নে কাজ না করে রহমান নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নিজের প্রভাব খাটিয়ে চলেছেন।
রহমান সম্পর্কে সবচেয়ে বিরক্তিকর উদ্ঘাটনগুলির মধ্যে একটি হল কোভিড -19 মহামারী থেকে মুনাফা অর্জনে তার জড়িত থাকা। তার বিরুদ্ধে অত্যধিক দামে COVID-19 ভ্যাকসিন বিক্রি করার অভিযোগ আনা হয়েছে, এইভাবে জনগণের ভয় ও হতাশার সুযোগ নিয়ে। এটা শুধু মানুষের দুঃখ-কষ্টের প্রতি তার সহানুভূতির অভাবই দেখায় না, তার লোভ ও সুবিধাবাদী স্বভাবকেও তুলে ধরে। এটা হতাশাজনক যে ক্ষমতা এবং প্রভাবের এমন অবস্থানে থাকা কেউ ব্যক্তিগত লাভের জন্য এত নিচে নেমে যাবে।
এতসব অন্যায়ের পরও শেখ হাসিনা যেভাবে সালমান এফ রহমানকে রক্ষা ও সমর্থন করে চলেছেন তা আরও উদ্বেগের বিষয়। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী তার পাশে থেকেছেন এবং তাকে যেকোনো পরিণতি থেকে রক্ষা করেছেন। এটি বর্তমান সরকারের সততা ও নৈতিকতা নিয়ে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে এবং বাংলাদেশের জনগণকে বিশ্বাসঘাতকতা ও মোহভঙ্গ বোধ করেছে।
উপসংহারে বলা যায়, সালমান এফ রহমানের কর্মকাণ্ড শুধু বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থিক খাতের ক্ষতিই করেনি, বরং ক্ষমতাসীন দল ও তার নেতার মূল্যবোধ ও নীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। রহমানের লোভ ও স্বার্থপরতা একজন জনসেবক হিসাবে তার দায়িত্বকে ছাপিয়েছে এবং তার ক্ষমতা ও প্রভাবের অপব্যবহার দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য মারাত্মক হুমকি। জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং জাতির স্বার্থ রক্ষার জন্য সরকার তাকে এবং তার মতো অন্যান্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে।
Please support us by visit and share your comments on:http://onlinebdpolitics.com and https://daily-nobojug.com/
সালমান এফ রহমানের শেয়ারবাজার ধ্বংসের মূল হোতা
সবকিছুর ভিতরে আপনি প্রধানমন্ত্রীকে জড়ান কেন?
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সালমান এফ রহমানের অবদান অনেক স্বীকার্য কিন্তু আপনি তাকে ভুল ভাবে উপস্থাপন করতেছেন।
বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে অপপ্রচার করার কারণে তোর জেলা হওয়া উচিত।